মোঃ মারুফ হোসেন লিয়নঃ রেলওয়ের জমিতে আওয়ামী লীগ নেতার বহুতল ভবন নির্মাণের তথ্য সংগ্রহকালে সমন্বয়ক পরিচয়ে সাংবাদিকের পেশাগত কাজে বাঁধা ও ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে, মানহানির তীব্র প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে নীলফামারীর সৈয়দপুরে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
আজ সোমবার (৩০জুন) সৈয়দপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী ঐ তিন সাংবাদিক।
লিখিত বক্তব্যে প্রতিদিনের সংবাদের সৈয়দপুর প্রতিনিধি মো. জহুরুল ইসলাম খোকন বলেন , গতকাল রবিবার (২৯জুন) আমাদের নিয়ে একটা ভিত্তিহীন ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে। এসআরএস নামের একটা ফেসবুক একাউন্ট থেকে এটা পোস্ট করা হয়। যা অনেকে না বুঝেই লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করেছেন। বিরুপ মন্তব্য করার আগে প্রকৃত ঘটনা জেনে নেয়াই নৈতিক ও বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু পোস্টকারীর মতই একতরফা নির্বুদ্ধিতা ও অভদ্রতার পরিচয় দিয়েছেন সকলে। এতে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। তাই প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরা প্রয়োজন মনে করছি।
মূলত: শহরের নিচু কলোনী এলাকার লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি জহুরুল ইসলাম খোকন (দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ), সিনিয়র সাংবাদিক এম এ করিম মিস্টার (দৈনিক মানব জমিন) ও এম আর রাজু আহমেদ (দৈনিক ঘোষণা) রোববার দুপুরে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে রেলওয়ের বিশাল জমি দখল করে অবৈধ বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা তারিক। সরেজমিনে গিয়ে এর সত্যতা পাই এবং স্থাপনার ছবি নেয়াসহ ওই বাড়ির একজন মহিলার সাথে কথা বলে আমরা চলে আসার সময় এক যুবক এসে উপস্থিত হয়। সে নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে হঠাৎই উগ্রতা প্রকাশ করে বলে আপনারা এখানে কেন এসেছেন? দ্রুত চলে যান। এই বলে সে চরম উত্তেজিত হয়ে প্রবল হটকারী আচরণ করে।এতে আমরা বলি যে, তুমি যদি সমন্বয়কই হও তাহলে তো আওয়ামী লীগকে তাড়ানো ও পুলিশকে পিটানোর কাজ তোমরা করেছ। তা এখন এখানে একজন আওয়ামী লীগ নেতা রেলের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলছে সেক্ষেত্রে নির্বিকার কেন? তবে কি কোন কিছুর বিনিময়ে তাকে পূনর্বাসন করছো? তার অবৈধ কাজ সম্পাদনে সহযোগিতা করছো? এমন প্রশ্নে সে মব ভায়োলেন্স সৃষ্টির পায়তারা করে। এতে আমরা তার সাথে কোন রকম বিতন্ডায় না জরিয়ে ফিরে আসি।আমাদের অগোচরে তার সাথে কথোপকথনের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে আমাদেরকে ভূয়া সাংবাদিক আখ্যায়রিত করে। যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
পরে জানতে পেরেছি যে, ওই যুবক স্থানীয় মইন ড্রাইভারের ছেলে সজিব। সে লাখ টাকা নিয়ে সমন্বয়ক পরিচয়কে ব্যবহার করে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে শেল্টার দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছে। বিষয়টা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে, রেলওয়ে আইডাব্লু অফিসের লোকজন গেলে তাদের সাথেও ওই যুবক একই ভাবে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে। তার এহেন অগ্রহণযোগ্য কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং এই অপরাধের বিচার চাই।
এ বিষয়ে সৈয়দপুরের আলো কে ভুক্তভোগী ওই তিন সাংবাদিক জানান, আজ একজন সংবাদ কর্মী হয়ে অত্যান্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে বসেছি । কারণ পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আজ আমরা তথাকথিত সমন্বয়কের মব ভায়োলেন্সের শিকার। দীর্ঘদিন থেকে সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত থাকার পরও এমন অনভিপ্রেত পরিস্থিতির সম্মুখীন কখনো হতে হয়নি। এমনকি বিগত ফ্যাসিস্ট আমলেও কেউ সংবাদ সংক্রান্ত কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারেনি। অথচ চব্বিশের অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ফ্যাসিস্টের দোসরদের পূনর্বাসনের সাথে জড়িত নব্য ফ্যাসিস্টরা সেই দুঃসাহস দেখিয়েছে। যা খুবই কষ্টের ও উদ্বেগজনক। আমরা ডিজিটাল আইনে তাকেসহ যারা বিষয়টা না জেনেই শেয়ার, কমেন্ট করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছি।
আপনার মতামত লিখুন :